এখন সময় ডেস্ক :

প্রকাশিত: ০৩ মে ২০২৫ , ০৯:২৪ এ এম

অনলাইন সংস্করণ

রাশিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞায় অনুমোদন দেবেন কি-না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন|সংগৃহীত

রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চূড়ান্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞায় ব্যাংকিং ও জ্বালানি ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন মস্কোর ওপর চাপ আরো জোরালো করতে পারেন, সে লক্ষ্যেই নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

তিনজন মার্কিন কর্মকর্তা ও বিষয়টিতে অবগত আছেন এমন একটি সূত্রের বরাতে ৩ মে শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা বলেন, নতুন নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গ্যাজপ্রম এবং প্রাকৃতিক সম্পদ ও ব্যাংকিং খাতে জড়িত প্রধান সংস্থাগুলো অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। তবে ওই কর্মকর্তা এ বিষয়ে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।

তবে ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞায় অনুমোদন দেবেন কি-না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। মস্কোর বিবৃতি ও কর্মকাণ্ডের প্রতি তার সহানুভূতি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার আহ্বান প্রত্যাখ্যানে হতাশায় পরিণত হয়েছে।

বিষয়টিতে অবগত এমন একটি সূত্র বলেছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ সমন্বিত করার চেষ্টা করছে। তবে ট্রাম্পকেই এর অনুমোদন দিতে হবে।’

দ্বিতীয় একজন মার্কিন কর্মকর্তা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এটি পুরোপুরি তার সিদ্ধান্ত।’

মার্কিন অর্থ বিভাগ সাধারণত এসব নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করে থাকে। কিন্তু এ বিষয়ে মন্তব্য করার অনুরোধে সাড়া দেয়নি অর্থ বিভাগ।

এখন ট্রাম্প যদি নতুন নিষেধাজ্ঞায় অনুমোদন দেন তবে তা ক্রেমলিনের প্রতি তার কঠোর অবস্থানকে নির্দেশ করতে পারে, বিশেষ করে গত বুধবার স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন খনিজ সম্পদ চুক্তি সইয়ের পর। ইউক্রেনের সাথে শান্তি প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ওই খনিজ চুক্তি করা হয়েছে বলে ব্যাপকভাবে প্রচার করেন তিনি।

রাশিয়া ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরু করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। যদিও এ পদক্ষেপগুলো রাশিয়ার অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তবে মস্কো বিভিন্ন উপায়ে ওই নিষেধাজ্ঞাগুলোকে পাশ কাটিয়ে যুদ্ধে অর্থায়ন করে যাচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ন্যাটো দূত কার্ট ভলকার বলেন, ‘পুতিনকে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও যুদ্ধবিরতির প্রতিটি সুযোগ দিতে প্রচেষ্টা চালিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু পুতিন বারবারই তা প্রত্যাখ্যান করেছেন। নতুন নিষেধাজ্ঞাটি রাশিয়ার ওপর চাপ তৈরির নতুন ধাপ।’ ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে ইউক্রেন আলোচনার জন্য মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি ছিলেন ভলকার।

তিনি আরো বলেন, ‘পুতিন উত্তেজনা বাড়াচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন এখন যৌথভাবে অবিলম্বে পূর্ণ যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানাচ্ছে। এদিকে পুতিন এখন একা হয়ে যাচ্ছেন।

জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প তার শান্তি প্রচেষ্টার প্রতি রাশিয়ার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ক্রেমলিনের সাথে ঘনিষ্ঠ প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে লক্ষ্যবস্তু করার জন্য গঠিত বিচার বিভাগের একটি টাস্ক ফোর্স ভেঙে দেয়া।

এছাড়াও ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করার অভিযোগ দিয়ে মস্কোপন্থী বিবৃতি দেন এবং তাকে ‘স্বৈরশাসক’ বলে আখ্যা দেন।

রয়টার্স মার্চ মাসে জানায়, রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র একটি পরিকল্পনা তৈরি করছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ট্রাম্প আক্রমণ বন্ধে পুতিনের গড়িমসি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং গত শনিবার ভ্যাটিকানে জেলেনস্কির সাথে ‘খুবই ফলপ্রসূ’ বৈঠক করেন।

এর ঠিক পরদিনই ট্রাম্প তার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক বার্তায় বলেন, ব্যাংকিং খাতসহ রাশিয়ার ওপর ব্যাপক নিষেধাজ্ঞা ও শুল্ক আরোপের কথা দৃঢ়ভাবে বিবেচনা করছেন তিনি। এটি যুদ্ধবিরতি ও চূড়ান্ত শান্তিচুক্তি না হওয়া পর্যন্ত বহাল থাকবে।